রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

মহারণে বৃষ্টির শঙ্কা

বিশ^কাপের ১৭ দিন পেরিয়ে গেছে। পরিসমাপ্ত ২১টি ম্যাচ। বৃষ্টির কারণে কয়েকটি ম্যাচ মাঠে গড়ায়নি। এতে হতাশ, ক্ষুব্ধ সাধারণ দর্শক-সমর্থক থেকে বোদ্ধারাও। বৃষ্টির পেটে যাওয়া ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা, পাকিস্তান-শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত-নিউজিল্যান্ডের মতো আকর্ষণীয়, বিগ ম্যাচও ছিল। ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্র্যাফোর্ডে আজ ২২তম ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে মুখোমুখি হবে ক্রিকেটের দুই পরাশক্তি ভারত ও পাকিস্তান।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এবং বৈরীপ্রতিম দুদলের ম্যাচ ছাপিয়ে এখানেও আলোচনায় বৃষ্টি! আবহাওয়ার রিপোর্ট বলছে, এ ম্যাচে বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। এবারের বিশ্বকাপে মিশ্র শুরু দুদলের। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের মিশন শুরু করেন কোহলি-রোহিতরা। সেখানে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭ উইকেটের লজ্জার হার নিয়ে মাঠ ছাড়েন সরফরাজ, হাফিজ, মালিকরা।

advertisement
ভারত এখন পর্যন্ত ৩ ম্যাচ খেলে অপরাজিত। ২ জয় এবং এক বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত সব মিলে কোহলিদের সংগ্রহ ৫ পয়েন্ট। টেবিলের চার নম্বরে অবস্থান। অন্যদিকে ৪ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় কেবল একটি। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। বাকি ২ হার এবং এক ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার সব মিলে দলটির সংগ্রহ ৩ পয়েন্ট। টেবিলের ৮ নম্বরে অবস্থান।

সেমিফাইনালে যেতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প নেই। সেই হিসাবে সুবিধাজনক অবস্থানে কোহলির ভারত। বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান মহারণ বেশ পুরনো। ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপ আসর শুরু হলেও, দুদলের প্রথম সাক্ষাৎ ১৯৯২ সালে পঞ্চম বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ায়। বিশ্বকাপে দুদলের সবশেষ দেখাও অস্ট্রেলিয়াতেই। পার্থক্য কেবল ভেন্যুতে। ১৯৯২ বিশ্বকাপে সিডনিতে, ২০১৫ সালে অ্যাডিলেডে। ভেন্যু বদলালেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। হারের তেঁতো স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।

বিশ্বকাপে ২৭ বছরের পুরনো শক্রতা ভারত-পাকিস্তানের। ২০০৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ বাদে; প্রতিবারই দেখা হয়েছে তাদের। ১৯৯২, ১৯৯৬, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০১১ এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে মোট ৬ ম্যাচ খেলে দুদল। প্রতিবারই একই চিত্র দেখে বিশ্ব। কখনো আজহারউদ্দিন, কখনো সৌরভ গাঙ্গুলী আবার কখনো মহেন্দ্র সিং ধোনিরা পাকিস্তানকে হারিয়ে বিজয়ের বেশে মাঠ ছাড়েন। ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ মানেই অন্যরকম আকর্ষণ।

একসময় নিয়মমাফিক দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নিতো দুদল। ক্রিকেটবিশ্ব দুভাগে ভাগ হয়ে উপভোগ করত এশিয়ার দুই পরাশক্তির ময়দানি লড়াই। রাজনৈতিক বৈরিতায় এখন আর দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নেয় না তারা। বিশেষ করে ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পর বৈরীভাব আরও প্রকট হয়। মাঝে কিছুটা বরফ গললেও সময় অনেকটা চলে গেছে। ২০১২ সালে সবশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে ভারত-পাকিস্তান।

ভারতের মাটিতে ৩ ম্যাচের ওই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জেতে মিসবাহ-আফ্রিদিরা। দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নেয় না বলে নিজ নিজ দেশে খেলোয়াড়দের মুখ দেখাদেখি বন্ধ অনেক দিন; এমনকি নিরপেক্ষ ভেন্যুতেও দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না ভারত-পাকিস্তান। আইসিসি স্বীকৃত টুর্নামেন্ট যেমন-বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি; এর বাইরে এশিয়া কাপে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে খেলতে দেখা যায় তাদের। এই যেমন গত বছর আরব আমিরাতে সবশেষ এশিয়া কাপে অংশ নেয় ভারত-পাকিস্তান।

বিশ্বকাপের ইতিহাস, রেকর্ড, পরিসংখ্যান ভারতের দখলে থাকলেও; মোট ওয়ানডে জয়ে পাকিস্তানই এগিয়ে। ১৯৭৮ সালে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ দিয়ে রঙিন পোশাকের লড়াই শুরু বৈরীপ্রতিম দেশ দুটির। সবশেষ লড়াই ২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপে। গত ৪১ বছরে দুদল মোট ১৩১ বার মুখোমুখি হয়। তাতে পাকিস্তানের ৭৩ জয়ের বিপরীতে ভারতের জয় ৫৪টিতে। এর মধ্যে ৪টি ম্যাচ নানা কারণে পরিত্যক্ত হয়।

ইংল্যান্ডের মাটিতে এর আগেও বিশ্বকাপে খেলেছে ভারত-পাকিস্তান। ২০ বছর আগে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ম্যানচেস্টারে মুখোমুখি হয় দুদল। ৮ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার ওই ম্যাচে ৪৭ রানে জেতেন শচিন, সৌরভ, দ্রাবিড়রা। ভারতের করা ৬ উইকেটে ২২৭ রানের ইনিংস ছুঁতে পারেনি ওয়াসিম আকরামের দল। ১৮০ রানে থামে পাকিস্তানের ইনিংস। কুঁড়ি বছর পর আবারও বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের মাটিতে খেলতে যাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান এবং সেই জুন মাসেই। এবার কি ভারত জুজু কাটবে পাকিস্তানের?

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877